বাংলাদেশে সরকারি ক্রয়ে কোনো চুক্তি বাতিল (Contract Termination) করার জন্য নির্দিষ্ট আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এ বিষয়ে মূল নির্দেশনা আসে:
সরকারি ক্রয় বিধিমালা ২০০৮ (Public Procurement Rules 2008) থেকে
এবং ক্ষেত্রবিশেষে সংশ্লিষ্ট চুক্তির শর্তাবলি (Contract Terms and Conditions) থেকে।
সাধারণভাবে সরকারি ক্রয় সংস্থা (Procuring Entity) চুক্তি বাতিল করতে যা যা অনুসরণ করে:
১. কারণ নির্ধারণ:
চুক্তি বাতিলের যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে, যেমন:
কাজ নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন না করা
গুণগত মান বজায় না রাখা
গুরুতর শর্ত লঙ্ঘন
দুর্নীতি বা প্রতারণা প্রমাণিত হওয়া
আইনি বা নীতিগত নিষেধাজ্ঞা
২. নোটিশ প্রদান:
সংস্থা প্রথমে ঠিকাদার/সরবরাহকারীকে লিখিত নোটিশ দেয়।
নোটিশে চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়, সংশোধনের জন্য সময় (যেমন ১৪ বা ২১ দিন) এবং সম্ভাব্য বাতিলের সতর্কতা থাকে।
সাধারণত "Notice to Correct" বা "Show Cause Notice" দেয়া হয়।
৩. উত্তর মূল্যায়ন:
ঠিকাদার/সরবরাহকারী যদি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা বা সংশোধন না করে, তখন সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয় চুক্তি বাতিল করার।
4. বাতিলের সিদ্ধান্ত ও নোটিফিকেশন:
সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিতভাবে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় (Termination Letter)।
সেখানে উল্লেখ থাকে:
বাতিলের তারিখ
পরবর্তী করণীয় (যেমন পারফরম্যান্স সিকিউরিটির টাকা বাজেয়াপ্ত করা)
৫. আইনি পরবর্তী পদক্ষেপ:
চুক্তি বাতিলের পর,
পারফরম্যান্স গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে
ক্ষতিপূরণ দাবি করা যেতে পারে
নতুনভাবে টেন্ডার ডাকা হতে পারে
প্রয়োজনে আদালত বা Alternative Dispute Resolution (ADR) এর মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
---
উল্লেখযোগ্য বিষয়:
চুক্তির নিজের শর্তাবলী (Contract Conditions) — বিশেষ করে Termination Clause — সবসময় অনুসরণ করতে হয়।
সরকারী টাকায় ক্রয় হওয়ায় সব সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে ডকুমেন্টেশন করতে হয়, যেন পরবর্তীতে অডিট বা তদন্তে সঠিক কারণ দেখানো যায়।
বিশেষ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনও লাগতে পারে (বিশেষ করে উচ্চমূল্যের বা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য)।
No comments:
Post a Comment